

শেখ নিয়াজ মোহাম্মদ বিশেষ প্রতিনিধি
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে শ্বাসরোধে শাশুড়ি ফাতেমা বেগমকে হত্যা মামলার দুই বছর পর প্রধান আসামি জামাই মো. রাশেদুল ইসলাম নান্টুকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-১১।
মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাতে র্যাব-১১ এর একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোনারগাঁ উপজেলার টিপরদী এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে। গ্রেপ্তার হওয়া নান্টু পুরান টিপরদী এলাকার এসিআই গেট সংলগ্ন কাজীবাড়ির বাসিন্দা। তার পিতার নাম মৃত কাজী আব্দুল কাশেম।
র্যাব জানায়, ২০২২ সালের ২২ সেপ্টেম্বর সকালে বস্তুল গ্রামের একটি রাস্তার পাশে ফাতেমা বেগমের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তিনি নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার দশদোনা এলাকার বাসিন্দা ছিলেন এবং অভিযুক্ত নান্টুর শাশুড়ি। তদন্তে জানা যায়, ঘটনার আগের দিন ২১ সেপ্টেম্বর বিকেলে নান্টু তার শাশুড়িকে ‘ব্যাংকে নিয়ে যাবার’ কথা বলে বাসা থেকে বের করেন। পরে সন্ধ্যায় পরিবারের সদস্যদের জানান, তিনি শাশুড়িকে ৩৩ হাজার টাকাসহ বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু ফাতেমা বেগম আর বাসায় ফিরে আসেননি। রাতভর খোঁজাখুঁজির পর পরদিন সকালে তার নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে এবং ময়নাতদন্তে নিশ্চিত হয়, তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। এজাহারে বলা হয়, ২১ সেপ্টেম্বর বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে পরদিন সকাল ৮টার মধ্যে হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হতে পারে। তদন্তে আরও উঠে আসে, নিহত ফাতেমা বেগম স্থানীয় কয়েকটি এনজিও থেকে নেওয়া ঋণের জামিনদার ছিলেন। সেই ঋণের দায় থেকে মুক্তি পেতেই জামাই নান্টু পরিকল্পিতভাবে এই হত্যাকাণ্ড ঘটান বলে ধারণা করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঘটনার পর নিহতের ছেলে সাইফুল ইসলাম ২৩ সেপ্টেম্বর সোনারগাঁও থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন (মামলা নম্বর-২১; ধারা ৩০২/২০১/৩৪, পেনাল কোড-১৮৬০)। ঘটনার পর থেকে আসামি পলাতক ছিলেন।
র্যাব-১১ এর জেলা কমান্ডার মেজর মো. সোহেল আহমেদ, বিপিএম (সেবা) জানান, “ঘটনার পর থেকেই আসামি আত্মগোপনে ছিল। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় তার অবস্থান শনাক্ত করে অভিযান চালানো হয়। হত্যাকাণ্ডটি ঠান্ডা মাথায় এবং পরিকল্পিতভাবে সংঘটিত হয়েছে।” তিনি আরও জানান, গ্রেপ্তারকৃত নান্টুকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সোনারগাঁও থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।